শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, English Version, ইপেপার

যেখানে সপ্তাহে কাজ মাত্র এক দিন-ছয় দিন ছুটি

বিশ্বের অনেক দেশই এখন সপ্তাহে চার দিন অফিস ও তিন দিন ছুটির মডেলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই ব্যবস্থায় ইতিবাচক ফলও মিলছে—কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক দেশ স্থায়ীভাবে এই ছন্দে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি কর্মঘণ্টা কতটা হওয়া উচিত, তা নিয়েও চলছে নানামুখী আলোচনা। দিনকে দিন ‘ওয়ার্ক কালচার’ নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। অল্প বেতনে বেশি সময় ধরে কাজ করানোর ধারা থেকে বেরিয়ে এসে অনেক দেশ এখন চাইছে কম দিনে বেশি কাজ—অর্থাৎ, কার্যকর ও মানবিক কর্মপরিবেশ।

এমনকি এমন দেশও আছে, যেখানে পুরো সপ্তাহে মাত্র এক দিন অফিস! এমনই এক উদাহরণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতু। সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে কম গড় কর্মঘণ্টার তালিকায় সবার শীর্ষে। ভানুয়াতুর মানুষ প্রতি সপ্তাহে গড়ে মাত্র ২৪.৭ ঘণ্টা কাজ করেন।

শুনতে অলীক কল্পনার মতো লাগলেও, এই বাস্তবতা তাদের জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ব্যক্তি জীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব দেয় ভানুয়াতুর সমাজ। পরিবার, বন্ধু, কাছের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানো এখানে সংস্কৃতির অংশ। ফলে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কম কাজ মানেই কম ফল নয়। বরং কম সময় কাজ করলেও কর্মীরা বেশি উৎপাদনশীল হতে পারে—যখন তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। ভানুয়াতু তারই প্রমাণ।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-র তথ্য অনুযায়ী, ভুটানে ৬১ শতাংশ, ভারতে ৫১ শতাংশ, বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৪০ শতাংশ কর্মজীবী সপ্তাহে ৪৯ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এত দীর্ঘ কর্মঘণ্টা কর্মীদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে অনেক দেশ এখন কর্মঘণ্টা কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। আইসল্যান্ড অনেক আগেই পরীক্ষামূলকভাবে চার দিনের সপ্তাহ চালু করেছে। যুক্তরাজ্য, স্পেন, নিউজিল্যান্ডসহ আরও কিছু দেশও এই মডেলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সৌদি আরবের একটি কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে চার দিনের অফিস চালু করেছে।